আগস্ট ১৪, ২০১৫

বাংলা কবিতার কোটেশন – ৬

         বাংলা কবিতার কোটেশন – ৬


১.  

   পরোয়া করি না, বাঁচি বা না-বাঁচি যুগের হুজুগ কেটে গেলে,
       
মাথার উপরে জ্বলিছেন রবি, রয়েছে সোনার শত ছেলে। 
      
প্রার্থনা করো যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস,
      
যেন লেখা হয় আমার রক্ত-লেখায় তাদের সর্বনাশ

                            আমার কৈফিয়ৎ - কাজী নজরুল ইসলাম 

. 

  বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,
     অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর
     বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি,
     অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী

                            নারী -  কাজী নজরুল ইসলাম 

৩. 

   তাজমহলের পাথর দেখেছ, দেখিয়াছ কি তার প্রাণ ,
       অন্তরে তার মমতাজ নারী, বাহিরেতে শা-জাহান

                           নারী -  কাজী নজরুল ইসলাম

৪.
  যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী
     সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।
     দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে না জুয়ায়
     নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়।।

                              বঙ্গবাণী - আবদুল হাকিম

৫. 

   সব পাখি ঘরে আসে - সব নদী - ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;
      
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন

                                 বনলতা সেন  জীবনানন্দ দাশ

৬.
       
    বল বীর -
          
বল উন্নত মম শির!
       
শির     নেহারি আমারি, নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!
               
বল বীর -
       
বল     মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি'
          
চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ তারা ছাড়ি'
          
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া,
          
খোদার আসন "আরশ" ছেদিয়া
               
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর!
       
মম     ললাটে রুদ্র-ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
               
বল বীর -
          
আমি চির-উন্নত শির!


                 বিদ্রোহী  কাজী নজরুল ইসলাম

৭. 
    ঘোর রজনী, মেঘের ঘটা,
      
কেমনে আইল বাটে?
      
আঙ্গিনার কোণে  বঁধুয়া তিতিছে ,
      দেখিয়া পরাণ ফাটে

                       দ্বিজ চণ্ডীদাস

৮.   

    এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি,
        
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি


                              দুই বিঘা জমি  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৯. 
  
     নমোনমো নম, সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি!
       
গঙ্গার তীর, স্নিগ্ধ সমীর জীবন জুড়ালে তুমি
       
অবারিত মাঠ, গগনললাট চুমে তব পদধুলি -
       
ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় ছোটো ছোটো গ্রামগুলি
       
পল্লবঘন আম্রকানন, রাখালের খেলাগেহ -
       
স্তব্ধ অতল দিঘির কালোজল নিশীথশীতলস্নেহ
       
বুক-ভরা-মধু বঙ্গের বধূ জল লয়ে যায় ঘরে
       
মা বলিতে প্রাণ করে আনচান, চোখে আসে জল ভরে


                              দুই বিঘা জমি  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

০. 
    আমি শুনে হাসি, আঁখিজলে ভাসি, এই ছিল মোরে ঘটে -
      
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে।।


                                     
                               দুই বিঘা জমি  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১.

    যায় যদি লুপ্ত হয়ে যাক,
             শুধু থাক্
       একবিন্দু নয়নের জল
      কালের কপোলতলে শুভ্র সমুজ্জ্বল
       এ তাজমহল


                     শা  জাহান - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


২. 

      তোমার কীর্তির চেয়ে তুমি যে মহত্‍‌,
                    তাই তব জীবনের রথ
            পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমার
                               বারম্বার

                        
         শা  জাহান - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩.  

    ধরার মাঝে তুলিয়া নিনাদ
       
চাহি নে করিতে বাদ প্রতিবাদ,
       
যে দিন আছি মানসের সাধ
        
মিটাব আপন-মনে---

     যার যাহা আছে তার থাক্ তাই,
     
কারো অধিকারে যেতে নাহি চাই
     
শান্তিতে যদি থাকিবারে পাই
      
একটি নিভৃত কোণে

                       পুরস্কার - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৪. 

   অন্তর হতে আহরি বচন
      
আনন্দলোক করি বিরচন,
      
গীতরসধারা করি সিঞ্চন
       
সংসারধুলিজালে


                      
পুরস্কার  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৫.

  আজি হতে শতবর্ষ পরে
     
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
         
কৌতুহলভরে,
     
আজি হতে শতবর্ষ পরে!


                          ১৪০০ সাল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  


0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন